ইসলামের নিরিখে যাকাতযাকাত একটি বাধ্যতামূলক দাতব্য যা প্রত্যেক মুসলমানের নিকট প্রত্যাশিত। এই ধরনের দাতব্য একটি ইবাদত। যাকাত ইসলামের পঞ্চ-স্তম্ভ বা ভিত্তির মধ্যে অন্যতম একটি। বাকি স্তম্ভগুলি হলো : শাহাদাহ (ঈমানের প্রকাশ্য ঘোষণা), প্রত্যহ স্বালাত প্রতিষ্ঠা, সওম পালন ও মক্কার হজ্জ করা। ইসলামি প্রদেশ বা সমাজে যাকাতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কাঠামো হিসেবে গণ্য করা হয়। কুর্আনের বিভিন্ন আয়াতে ও বিভিন্ন হাদিসে অত্যন্ত প্রজ্ঞাময় ভাষায় যাকাতের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।
যাকাতের সংজ্ঞাযাকাতের আভিধানিক অর্থ : পবিত্র করা। এদ্বারা একজন মুসলমানের অর্থ ও আত্মার পবিত্রতাকে বোঝায়। অর্থের পবিত্রতা বলতে বোঝায় আর্থিক উন্নতি এবং নিষ্ঠার সঙ্গে তা বন্টনের উদ্দেশ্যে সম্পদের ব্যবহার। আত্মার পবিত্রতা বলতে বোঝায় ঘৃণা, হিংসা-বিদ্বেষ, স্বার্থপরতা, অস্বস্তি ও লোভ-লালসা হতে আত্মার মুক্তি। পাপ হতে পবিত্রতা কুর্আনের অন্যান্য তাৎপর্যের অন্তর্ভুক্ত।
পারিভাষিক অর্থে, যাকাত একটি নির্দিষ্ট অংশ যা একজন মুসলমানের প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ ও উপার্জন হতে আদায় করা হয়। এটা বন্টন করা হয় নির্ধারিত দানগ্রাহীদের মাঝে এবং অনুরূপ সাধারণভাবে ব্যয় করা হয় একটি মুস্লিম সমাজের পরিকাঠামো ও উন্নতির জন্য। এই দানকার্য একজন মুসলমানকে প্রত্যেক চান্দ্রবছরে মাত্র একবার সম্পাদন করতে হয়।
একজন মুসলমামের মৌলিক খরচ, পারিবারিক খরচ, ঋণশোধ, দান ও কর আদায়ের পর অবশিষ্ট অর্থের ওপর যাকাত আদায় করতে হয়। প্রত্যেক মুস্লিম নর ও নারী, যে ৮৫ গ্রাম (৭⅟২ তোলা) বা ততোধিক সোনা বা তার সমপরিমাণ মুল্য কিংবা ৫৯৫ গ্রাম (৫২⅟২ তোলা) রুপো বা তার মূল্যের মালিক হবে তার জন্য ২.৫% হারে যাকাত আদায় করা অপরিহার্য।
যাকাতের উদ্দেশ্যযাকাতের একটি গভীর মানবিক ও আর্থ-সামাজিক গুরুত্ব আছে। এই ধর্মীয় কাজটি অর্থের পঞ্জিভুতকরণ হতে বাধা দেয় এবং মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য ও একনিষ্ঠতা তৈরি করে, কারণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ দুস্থ-দরিদ্রদের মাঝে বন্টন করে দেওয়া হয়।
এছাড়া যাকাত আত্মশুদ্ধিতে সাহায্য করে এবং একজন মসলমানকে আল্লাহ্র অনুগ্রহের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশে উৎসাহ দেয়। [ক] [১]
কুর্আনসমস্ত সম্পদশালী মুসলমানের সম্পদকে আল্লাহ্ তাআলার দৃষ্টিতে পরিশুদ্ধ করার জন্য এই দাতব্যকার্যটি সম্পাদন করা তাদের জন্য অত্যাবশ্যক। অন্যভাবে বলা যায়, আল্লাহ্ তাআলা আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। তাই আমাদের দায়িত্ব, তার কিছু অংশ নিতান্ত দরিদ্রদের ফিরিয়ে দেওয়া, যা আমাদের বাকি অর্থকে পবিত্র করবে। যেমন আল্লাহ্ তাআলা বলছেন : “তাদের ধন-সম্পদ হতে যাকাত গ্রহণ করো, যার দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র ও পরিশোধিত করে দেবে”। (কুর্আন, সূরা তওবা ৯:১০৩)
শরয়ী বিধানএটা কুর্আনে আল্লাহ্র বিবৃত বাণীর ওপর নির্ভর করে : “আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে তুমি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিয়ে দাও”। (কুর্আন, সূরা তওবা ৯:৩৪)
যারা নিসাব (প্রয়োজনীয় পরিমাণ অর্থ)-এর মালিক হয়ে যায়, তাদের জন্য যাকাত অপরিহার্য হয়ে যায়। যাকাত প্রদান করা অপরিহার্য, কারণ এটা ইস্লামের পঞ্চ-স্তম্ভের অন্যতম একটি। (সহি বুখারি, খণ্ড ১:৮)
যাকাত ফরজ হওয়ার শর্তযাকাতের জন্য দুটি আবশ্যিক শর্ত রয়েছে। যথা : অর্থের পরিমাণ এবং সময়কাল, যেমন ইস্লামে উল্লেখ করা হয়েছে। এমন প্রত্যেক মুস্লিম, যে অর্থের নুন্যতম পরিমাণ অর্থাৎ নিসাবের মালিক হবে এবং অন্যান্য শর্তগুলির ব্যাপারে নিশ্চিত হবে, তার জন্য যাকাত আদায় করা আবশ্যিক।
সাধারণভাবে যাকাত আদায় করতে হয়, এমন দ্রাব্যাদির প্রকারভেদস্বর্ণের নিসাব ২০ মিস্কাল বা ৮৫ গ্রাম। রৌপ্যের নিসাব ১৪০ মিস্কাল বা ৫৯৫ গ্রাম। যদি কোনো মহিলা এর থেকে কম পরিমাণ সোনা বা রুপোর গহনার মালিক হয় তাহলে তার গহনার ওপর কোনো যাকাত নেই।
স্বর্ণযে পরিমাণ স্বর্ণের ওপর যাকাত প্রয়োজন হয় তা হলো প্রায় ৮৫ গ্রাম, যদি সেই পরিমাণ পুরো একবছর ধরে অপরিবর্তনীয়ভাবে কারো নিকট থাকে। এই অবস্থায় প্রদেয় যাকাত হবে দশের এক-চতুর্থাংশ (২.৫%), যার পরিমাণ প্রায় ২.১২৫ গ্রাম।
রৌপ্যযদি রুপোর পরিমাণ ৫৯৫ গ্রাম বা ততোধিক হয় এবং তা কারো অধিনে পুরো একবছর ধরে অপরিবর্তনীয় অবস্থায় থাকে তাহলে তার যাকাত প্রয়োজন হয়। এই অবস্থাতেও প্রদেয় যাকাতের পরিমাণ হবে দশের এক-চতুর্থাংশ (২.৫%), যা প্রায় ১৪.৮৭ গ্রাম।
কারো অধিকারভুক্ত মুদ্রাযখন এর মুল্য সেই সোনা বা রুপোর সমপরিমাণ হয়ে যায়, যার ওপর যাকাত ফরজ হয়, এবং সেই পরিমাণ নিসাবমূল্যের ওপর পূর্ণ একবছর ধরে থাকে তখন এর যাকাতও দশের এক-চতুর্থাংশ বা ২.৫% দিতে হয়।
দ্রাব্যাদির শ্রণিবিভাগস্বর্ণ, রৌপ্য ও মুদ্রা ছাড়া যেসব জিনিসের ওপর যাকাত দিতে হয়, সেগুলো হলো :
যাকাতগ্রহিতাগণআট প্রকার লোকের ওপর যাকাত ব্যয় করা যায়। যেমন কুর্আনে উল্লেখ আছে (এখানে আরবি শব্দ ‘আস্স্বাদাকাত’-এর অর্থ অপরিহার্য দাতব্য অর্থাৎ যাকাত) : যাকাত শুধুমাত্র অভাবগ্রস্থ, নিঃস্ব, যাকাত আদায়ের কাজে নিযুক্ত কর্মচারীদের, যাদের মনকে ইস্লামের প্রতি অনুরাগী করা আবশ্যক তাদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, আল্লাহ্র পথে জিহাদকারীদের জন্য এবং মুসাফিরদের জন্য। এ হলো আল্লাহ্র পক্ষ হতে নির্ধারিত বিধান। আর আল্লাহ্ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়”। (কুর্আন, সূরা তওবা ৯:৬০)
নিসাবের পরও তুমি যাকাত না দিলে তার শাস্তিরসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন : “আল্লাহ্ তাআলা যাকে সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু সে এর যাকাত আদায় করেনি, কিয়ামতের দিন তার সম্পদকে একটি টেকো মাথাবিশিষ্ট বিষধর সাঁপের আকৃতি দেওয়া হবে, যার চোখের ওপর থাকবে দুটি কালো দাগ (বা তার মুখের মধ্যে থাকবে দুটি বিষধর মাংসগ্রন্থী)। সাঁপটিকে তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। সাঁপটি তার পার্শ্বদুটি কামড়ে ধরে বলবে : আমি তোমার অর্থ, আমি তোমার পঞ্জিভুত সম্পদ”। (সহি বুখারি ১৪০৩ (খণ্ড ২:৪৮৬)
পূর্ববর্তী নবিদের প্রতি যাকাতযাকাতের ইতিহাস ঠিক স্বালাতের ইতিহাসে মতোই। কুর্আন থেকে এটা স্পষ্ট যে, স্বালাতের ন্যায় এর নির্দেশনামাও সর্বদা নবিদের শরিয়তে বিদ্যমান থেকেছে। যখন মহাক্ষমতাধর আল্লাহ্ মুসলমানদেরকে এটা প্রদান করতে বলেন তখন নিশ্চয়ই এটা তাদের অজানা কিছু হবে না। ইব্রাহিম (আঃ)-এর ধর্মের অনুসারীরা এবিষয়ে পূর্ণজ্ঞাত ছিলেন। একারণেই কুর্আন এটার নাম দিয়েছে : “নির্ধারিত হক”। (কুর্আন, সূরা মাআরিজ ৭০:২৪)
তাই এটি একটি প্রাক-বিদ্যমান সুন্নাত, যেটাকে নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্ তাআলার আদেশানুক্রমে জরুরি কিছু সংস্কারসহ প্রচলিত করেছেন। কুর্আন বলছে, যেভাবে নবি ইসমাইল (আঃ) তাঁর পরিবারবর্গকে স্বালাত প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দিয়েছিলেন, ঠিক একইভাবে তিনি তাদেরকে যাকাত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। “সে তার পরিজনবর্গকে স্বালাত ও যাকাতের নির্দেশ দিত এবং সে ছিল তার প্রতিপালকের নিকট সন্তোষভাজন”। (কুর্আন, সূরা মারয়াম ১৯:৫৫) মহাক্ষমতাশালী আল্লাহ্ বানী ইস্রাইলকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এই ভাষায় : “আমি তোমাদের সঙ্গে আছি তোমরা যদি স্বালাত প্রতিষ্ঠা করো এবং যাকাত প্রদান করো”। (কুর্আন, সূরা মায়েদা ৫:১২)
নবিদের ব্যাপারে কুর্আন বলছে, বিষয়টি ইস্হাক ও ইয়াকুব (আঃ)-এর বংশধর সংক্রান্ত : “তাদের কাছে আমি অহি প্রেরণ করেছিলাম সৎকর্ম করতে, স্বালাত প্রতিষ্ঠা ও যাকাত প্রদানে উদ্যমী হতে”। (কুর্আন, সূরা আম্বিয়া ২১:৭৩) নবি ইসা (আঃ) নিজের সম্পর্কে বলেছিলেন : “আর তিনি (আল্লাহ্) আমাকে আজীবন স্বালাত ও যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন”। (কুর্আন, সূরা মারয়াম ১৯:৩১)
মহান আল্লাহ্ কুর্আনে বলছেন : “যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল তারা তো বিভক্ত হলো তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পরই। তারা আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহ্র আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্তে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং স্বালাত ও যাকাত আদায়ে অধ্যাবসায়শীল হতে। আর এটাই সঠিক ধর্ম”। (কুর্আন, সূরা বাইয়্যিনাহ্ ৯৮:৪-৫) [৩]
হাদিসযদিও পার্থিব ভালোবাসা অনেক কিছুর সঙ্গেই থাকে, কিন্তু সবথেকে শক্তিশালী ও ভয়ঙ্কর ভালোবাসা হলো বস্তুগত সম্পদের ভালোবাসা। এজন্য নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এটাকে মুসলমানদের জন্য বৃহত্তম ক্ষতি বলে অভিহিত করেছেন : “সম্পদ হচ্ছে আমার উম্মতের জন্য পরীক্ষা”। (তির্মিযি : ৪৮১, মুস্তাদ্রাক হাকিম, ৪:৩১৮) যদি কোনো মুসলমান নিজেকে ধন-সম্পদের প্রলোভন থেকে রক্ষা করতে পারে তাহলে সে অন্য অনেক পাপ হতে নিজেকে নিরাপদ রাখতে পারবে।
যাকাতের একটি দ্বিতীয় পর্যায়ের উদ্দেশ্য হলো দরিদ্র মুসলমানদের নিকট তাদের মৌলিক প্রয়োজনগুলো নিবারণ করা। নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : “নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাদেরকে (মুসলমানদেরকে) যাকাত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। এটা ধনীদের কাছ থেকে নিয়ে দরিদ্রদের দেওয়া হবে”। (সহি মুস্লিম ১:২১) এই রিওয়ায়াতগুলি পরিষ্কার করে দেয় যে, যাকাতেরও একটি আর্থ-সামাজিক দিক আছে যা ছাড়া এর ইস্লামি মূল্যবোধ অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : “আল্লাহ্ তাআলা যাকে সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু সে এর যাকাত আদায় করেনি, কিয়ামতের দিন তার সম্পদকে একটি টেকো মাথাবিশিষ্ট বিষধর সাঁপের আকৃতি দেওয়া হবে, যার চোখের ওপর থাকবে দুটি কালো দাগ (বা তার মুখের মধ্যে থাকবে দুটি বিষধর মাংসগ্রন্থী)। সাঁপটিকে তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। সাঁপটি তার পার্শ্বদুটি কামড়ে ধরে বলবে : আমি তোমার অর্থ, আমি তোমার পঞ্জিভুত সম্পদ”। (সহি বুখারি : ১৪০৩ (খণ্ড ২:৪৮৬) [৪] [৫]
যাদের ওপর যাকাত বাধ্যতামূলকযাকাত বাধ্যতামূলক হয় সেই নির্দিষ্ট অর্থের ওপর তার মালিকের অধিনে এক চান্দ্র-বছরের সময়কাল অতিবাহিত হওয়ার পর যাকে ইসলামের ভাষায় নিসাব বলে। তারপর মালিককে টাকায় ২.৫% (বা ১/৪০) যাকাতস্বরূপ প্রদান করতে হয়। [৬]
ইসলামে দাতব্যের রূপভেদইসলামের মধ্যে দুই ধরনের দাতব্যকার্য রয়েছে। যথা : বাধ্যতামূলক (ফরজ) এবং ঐচ্ছিক (নফল), যথাক্রমে যাকাত ও সাদকা বলা হয়। যাকাত শব্দটি যাকা ক্রিয়াপদ হতে এসেছে, যার অর্থ সমৃদ্ধিশালী হওয়া, স্বাস্থ্যকর হওয়া, পরিশুদ্ধ হওয়া, অর্থাৎ পবিত্রতা, বিশুদ্ধতা। অর্থের একটা অংশ পরিত্যাগ করা মানে সেটাকে পবিত্র করা বা বৈধ করা, যেন বিধিসঙ্গতভাবে যাকাত-দাতা কর্তৃক অবশিষ্টাংশ ব্যবহৃত হয়। এর ফলে একজন মানুষ তার থেকে অধিকতর সম্পদের মালিক হয়ে যেতে পারে যতটা জীবনোপায়ের জন্য প্রয়োজন।
যাকাত ছাড়াও কুর্আন ও হাদিস (মুহাম্মাদসাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের ঐতিহ্য, কথা ও কর্ম) সাদকা বা নফল যাকাতের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেছে। এর উদ্দেশ্যও অভাবগ্রস্ত লোককে দেওয়া।[৭]
যাকাতের উপকারিতাইসলামি হুকুমে অসংখ্য উপকারিতা আছে। যার কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হচ্ছে : ১। এটা সমাজের অভাবগ্রস্থ লোকদের প্রয়োজন নিবারণ করে। ২। এটা ধনী ও গরিবের মধ্যে ভালো সম্পর্ককে বলিষ্ঠ করে, কারণ প্রত্যেক ব্যক্তি স্বভাবতই সেই ব্যক্তির প্রতি অনুরাগী হয় যে তার উপকার করে। ৩। এটা দাতার বক্তিত্বকে নিখুঁত ও পবিত্র করে দেয় এবং তার লোভ-লালসা ও কার্পণ্যের মতো চরিত্রগুলি দূর করে দেয়; যেমন কুর্আনে উল্লেখ আছে : “তাদের ধন-সম্পদ হতে যাকাত গ্রহণ করো, যার দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র ও পরিশোধিত করে দেবে”। (কুর্আন, সূরা তওবা ৯:১০৩) ৪। এটা একজন মুসলমানের মধ্যে অভাবগ্রস্থ লোকদের জন্য মুক্তহস্ততা, মহানুভবতা ও সহানুভূতি জাগ্রত করে। ৫। এটা আল্লাহ্র অনুগ্রহ নিয়ে আসে এবং অর্থিক উন্নতি ও ব্যয়ের বিনিময়ের কারণ হয়। যেমন আল্লাহ্ তাআলা বলছেন : “তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে তিনি তার বিনিময় দেবেন, আর তিনিই শ্রেষ্ঠ জীবিকাদাতা”। (কুর্আন, সূরা সাবা ৩৪:৩৯)
আরও দেখুনআল্লাহ্, নবি মুহাম্মাদ (সঃ), ইসলামের স্তম্ভসমূহ, ইসলাম ও দাতব্যকার্য।
তথ্যসূত্র[ক] http://www.tamilislam.com/english/basic/Zakath_sadaqah.htm [১] http://islamqa.info/en/ref/50801 [২] http://www.missionislam.com/knowledge/zakat.htm, http://quran.com/9/60 [৩] http://www.askislampedia.com/Quran [৪] http://www.islamhouse.com/p/316361 [৬] http://www.islamicity.com/mosque/zakat/ [৭] http://forums.islamicawakening.com/f20/what-is-the-difference-between-sadaqa-zakat-47629/ |
.