আয়েশার সঙ্গে রসূলুল্লাহ্ ﷺ-এর বিবাহ


আয়েশা (রাঃ)-এর সঙ্গে নবি মুহাম্মাদ এর বিবাহের মহাপ্রজ্ঞা ও বিশদ আলোচনা

অনেকেই নবির প্রকৃত চিত্রকে বিকৃত করার চেষ্টা করে এবং তজ্জন্য প্রচার করে যে, নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম ছিলেন একজন যৌন নিপীড়নকারী, এর পক্ষে তারা যুক্তি দেয় যে, তিনি আয়েশাকে বিবাহ করেছিলেন যখন তিনি ছিলেন একটি শিশু।

 

বিষয়সূচি

 

বিয়ের বয়সসংক্রান্ত ইসলামি আইন

ইসলামে বিয়ের নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। যখনই একজন মানুষ বয়ঃসন্ধিতে উপনীত হয় তখনই সে বিয়ের উপযুক্ত হয়ে যায়। বিবাহ (নিকাহ্‌), বিবাহচুক্তি এর পূর্বেও হতে পারে কিন্তু বিয়ের নির্জনবাস কেবল বয়ঃসন্ধিতে উপনীত হওয়ার পরই হতে পারে।

 

কখন বয়ঃসন্ধি শুরু হয়?

যদিও সাধারণত মেয়েদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি ৮ থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয়ে যায়, তবে এর পূর্বে বা পরেও হতে পারে। সকলের শরীরে বিভিন্ন সময় পরিবর্তন আসে। যদি ১০ বছর বয়সেই তোমার বক্ষ উঁচু হয়ে ওঠে অথবা ১৪ বছর বয়সেও তোমার ঋতুস্রাব আরম্ভ না হয় তাহলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। অবশেষে সবাই বয়ঃসন্ধি অতিক্রম করে।  

http://www.healthtouch.com/bin/EContent_HT/cnoteShowLfts.asp?fname=07103&title=PUBERTY+IN+GIRLS+&cid=HTHLTH

 

যদিও মহিলাদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধির বয়সে তারতম্য ঘটে তবে সাধারণত তা খুব তাড়াতাড়ি এসে পড়ে। “Woman (মহিলা)” পুস্তকের বিখ্যাত লেখকগণ (হারমান এইচ. প্লস, ম্যাক্স বারটেল্‌স এবং পল বারটেলস, ওম্যান, প্রথম খণ্ড, লর্ড ও ব্রান্সবাই, ১৯৮৮, পৃষ্ঠা ৫৬৩, http://www.biblioz.com/lp25762280577.html), বলছেন : “দেশ বা প্রদেশের গড় তাপমাত্রাকে মূল ফ্যাক্টার হিসেবে গণ্য করা হয়, তা শুধু ঋতুস্রাব-বিষয়েই নয় বরং বয়ঃসন্ধিতে যৌন উন্নতির সর্বক্ষেত্রেই”। http://www.livescience.com/1824-truth-early-puberty.html

 

মেয়েদের বয়ঃসন্ধি

একটি অস্ট্রেলিয়ান সরকারিজনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানবলছে :

 “সাধারণত বয়ঃসন্ধির প্রথম লক্ষণ দ্রুত বৃদ্ধি : তুমি লম্বা হও; তোমার বক্ষ বিকশিত হয়; গোপনাঙ্গে এবং বগলে চুল গজাতে শুরু করে। এটা ১০ বছর থেকে ১৪ বছর বয়সের মধ্যে আরম্ভ হয়ে থাকে – যদিও কারো ক্ষেত্রে পূর্বে এবং কারো ক্ষেত্রে পরে ঘটতে পারে”।(http://www.population.health.wa.gov.au/Communicable/Resources/2107%20PubertyinGirls.pdf)

 

Medline Plus Medical Encyclopedia (মেডলাইন প্লাস মেডিকাল ইন্সাইক্লোপিডিয়া)-র মন্তব্য :

“এঁচড়ে পাকা বয়ঃসন্ধি শরীরের বৈশিষ্ট্যসমূহের অকাল উন্নয়ন যা সাধারণত বয়ঃসন্ধির সময় ঘটে। (বয়ঃসন্ধি জীবনের সেই পর্যায় যখন শরীরে দ্রুত পরিবর্তন এবং প্রজনন ক্ষমতার বিকাশ ঘটে)। বয়ঃসন্ধি ছেলেদের ক্ষেত্রে সাধারণত ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ৯ থেকে ১৬ বছর বয়সের মধ্যে ঘটে। (http://www.nlm.nih.gov/medlineplus/ency/article/001168.htm)

 

মেয়েদের ক্ষেত্রে, এঁচড়ে পাকা বয়ঃসন্ধি হলো ওই সময় যখন ৮ বছর বয়সের পূর্বেই নিম্নের কোনো একটি বিষয় দেখা যায় : স্তন, বগল বা গোপনাঙ্গের চুল, পরিপক্ক বহিঃস্থ জননেদ্রিয়, প্রথম ঋতুস্রাব”।

 

যখন আয়েশা (রাঃ) বয়ঃসন্ধিতে উপনীত হন তখন তাঁর বিবাহ সুসম্পন্ন হয়। যেমন কারেন আর্‌মস্ট্রোং তাঁর পুস্তক “মুহাম্মাদ, পৃষ্ঠা ১৫৭”-তে লিখছেন : “তাবারি বলছেন : তিনি এতটাই ছোটো ছিলেন যে, তিনি তাঁর পিতৃগৃহে থাকতেন এবং যখন তিনি বয়ঃসন্ধিতে উপনীত হন তখন তাঁর বিয়ের নির্জনবাস সম্পন্ন হয়”।

সুতরাং মনে রাখুন, একটি মেয়ের ঋতুস্রাব ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সের মধ্যে ঘটে, যদিও এরকম সবসময় হ্য় না, তবে ১৪ বা ১৫ বছর বয়সে তার ঋতুস্রাব শুরু হতে পারে। তবে সম্ভবত আয়েশার বয়ঃসন্ধি ৮ বছরে শুরু হয়েছিল এবং ৯ বছর বয়স পর্যন্ত অব্যহত ছিল। এই বয়ঃসন্ধিতে একবার তাঁর ঋতুস্রাবের ঘটে, এটাই তাঁকে মহিলায় পরিণত করে দেয়, তখন থেকে তিনি আর কোনো শিশুকন্যা ছিলেন না। সেসময় তিনি মহিলা হওয়ার উপযুক্ত ছিলেন, সুতরাং তিনি আর শিশু নন।

 

প্রমাণ : তাছাড়া, আয়েশা (রাঃ) যে বয়ঃসন্ধির মধ্যে কালাতিপাত করছিলেন, এই সত্যিটা আমরা বিশুদ্ধ বর্ণনা হতেজানতে পারি। আধুনিক বিজ্ঞান প্রমাণ করে যে, বয়ঃসন্ধিতে চুল ঝরে পড়তে পারে আর ঠিক একথাই আমরা হাদিসে পড়ি : আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেন : “আমি যখন ছয় বছরের মেয়ে তখন আমার সঙ্গে নবির বিয়ের পাকা কথা হয়ে যায়। আমরা মদিনায় গিয়ে বানি হারিস বিন খাজরাজের গৃহে অবস্থান করলাম, অতঃপর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং আমার চুল ঝরে পড়ে…”।(সহি বুখারি : ৩৬০৫)

 

কতিপয় মেয়ের উদাহরণ যারা ৫-৯ বছর বয়সে সন্তানের জন্ম দিয়েছে

সত্যি বলতে, দ্রুত বয়ঃসন্ধির অনেক ঘটনাই ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ, লিনা মেডিনা ৫ বছর ৭ মাস ২১ দিন বয়সে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ইন্সাইক্লোপিডিয়া উইকিপিডিয়া বলছে :

“লিনা মেদিনা (২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৩ সালে পৌরেঞ্জ পেরু স্থানে জন্মগ্রহণ করেন) ৫ বছর ৭ মাস ২১ দিন বয়সে সন্তানের জন্ম দেন। তিনি ছিলেন চিকিৎসা-ইতিহাসের সর্বকনিষ্টা মা। অনুরূপ একটি বিশ্ব রেকর্ড ঘটনা ঘটেছে”।

(http://en.wikipedia.org/wiki/Lina_Medina)

 

তাছাড়া একটি ৯ বছরের থাই মেয়ে সন্তানের জন্ম দিয়েছে :

সংবাদ চিত্রটিNew Straits Times, ১০/৩/২০০১-হতে গৃহীত। 

 

আমাদের বর্তমান বিশ্বে, বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলির মানুষ খুব ছোটো মেয়েদের বিবাহ করিয়ে দেয়। তাহলে একজন মানুষ যিনি ১৪০০ বছর পূর্বে ৯ বছর বয়সী মেয়েকে বিবাহ করেছিলেন, তাঁকে আমরা কেন শিশু নিপীড়ক বলব, অথচ অনেক মানুষ আজও এরকম কাজ করে ? উপরোক্ত মেয়েটিও ৯ বছর বয়সে সন্তানের জন্ম দিয়েছে।  

আয়েশার (আমাদের নবির স্ত্রী) পিতামাতা স্বেচ্ছায় এবং নিজেদের পছন্দে আমাদের নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে তাঁদের কন্যার বিবাহ দিতে সম্মত হয়েছিলেন। তাঁরা এতে গৌরাবান্বিত ছিলেন যে, তাঁরা তাঁর বিবাহ দিচ্ছেন ভূপৃষ্ঠের সর্বোত্তম মানুষের সঙ্গে।

 

সর্বকনিষ্ঠা মায়েদের তালিক

http://en.wikipedia.org/wiki/List_of_youngest_birth_mothers

 

নবি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের বিবাহ পরিপ্রেক্ষিতের নিয়মানুসারে

নবির জীবনধারা এবং তাঁর বিয়ের বিশদ বিবরণ দেখব : 

পাত্রীর নাম

বিয়ের সময় পাত্রীর বয়স

মন্তব্য

খাদিজা বিন্‌ত খুওয়াইলিদ

৪০

পূর্বেই দু’বার বিধবা

সাউদা বিন্‌ত যামা

৫০

বিধবা

আয়েশা বিন্‌ত আবু বাক্‌র

৯ বছর বয়সে নবির সঙ্গে বৈবাহিক জীবন শুরু করেন

হাফ্‌সা  বিন্‌ত উমার বিন খাত্তাব

২২

বিধবা

যায়নাব বিন্‌ত খুযায়মা

৩০

তালাকপ্রাপ্তা

উম্মে সাল্‌মা বিন্‌ত আবু উমাইয়া

২৬

বিধবা

যায়নাব বিন্‌ত জাহাশ

৩৮

বিধবা

জুওয়াইরিয়া বিন্‌ত হারিস

২০

বিধবা

উম্মে হাবিবা বিন্‌ত সুফ্‌য়ান

৩৬

বিধবা

মারিয়া কিব্‌তিয়া বিন্‌ত শামুন

১৭

-

সাফিয়া বিন্‌ত হাই বিন আখতাব

১৭

বিধবা

রাইহানা বিন্‌ত আম্‌র বিন কানাফা

-

-

মাইমুনা বিন্‌ত হারিস

৩৬

বিধবা

 

তিনি খাদিজাকে বিবাহ করেছিলেন যখন তাঁর (খাদিজার) বয়স ছিল ৪০ বছর এবং তাঁর (সঃ) বয়স ছিল ২৫ বছর। এই বয়সকে একজন পুরুষের যৌন-বসন্ত বলা যায় আর তিনি (সঃ) তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত শুধু তাঁরই সঙ্গে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন অর্থাৎ অন্য কোনো বিবাহ করেননি।

 

নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হ ওয়া সাল্লাম আয়েশা (রাঃ) ছাড়া কোনো কুমারী মেয়েকে বিবাহ করেননি। তাঁর অন্য সমস্ত পত্নী ছিলেন অকুমারী, এটাই ওই সমস্ত ধারণাকে খণ্ডন করে দেয় যা অনেক শত্রু ও প্রতিকূল সূত্র দ্বারা ছড়িয়ে পড়েছে এবং এই ধারণাকেও খণ্ডন করে যে, নবির বিয়ের মৌলিক অভিপ্রায় ছিল শারীরিক বাসনা এবং নারীদের সম্ভোগ; যদি তাঁর উদ্দেশ্য তাই হত তাহলে তিনি শুধুমাত্র কুমারী ও সুন্দরী রমণীদেরকেই বেছে নিতেন।  

 

তাঁর সমস্ত পাত্রী ছিলেন বয়স্কা বিধবা (আয়েশা (রাঃ) ব্যতীত)

উপরের চার্টটিও প্রমাণ করে যে, নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম কোনো শিশুকন্যা নিপীড়নকারী ছিলেন না। যদি একথা নবি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের ক্ষেত্রে সত্য হত তাহলে তিনি আয়েশার সঙ্গে ঠিক সেসময় সঙ্গম করতেন যখন তাঁর বয়স ছিল ছয় বছর এবং তিনি আরও অনেক ৪ থেকে ৭ বছর বয়সী মেয়েদেরকে বিবাহ এবং তাদের সঙ্গে সহবাস করতে পারতেন, কিন্তু তিনি কখনো এমন করেননি।

 

নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম কি ৬ বছরের আয়েশাকে বিবাহ করেছিলেন ?

বিশুদ্ধ হাদিসের বর্ণনা হতে প্রতীয়মান হয় যে, নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম ছয় বছরের আয়েশাকে বিবাহ করেছিলেন, কিন্তু ওই সব বর্ণনা হতে এও স্পষ্ট হয় যে, বিবাহের নির্জনবাস সুসম্পন্ন হয়েছিল যখন তাঁর বয়স ছিল নয় বছর।

 

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে : “রসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম আমার বাগ্‌দত্তা হয়ে যান যখন আমি ছয় বছরের মেয়ে ছিলাম। আমরা মদিনা গিয়ে বানি হারিস বিন খাযরাজের গৃহে অবস্থান করলাম। অতঃপর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং আমার চুল ঝরে পড়ে। পরে চুল আবার গজিয়ে ওঠে। আমি আমার কিছু মেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে দোলনায় খেলাধুলা করছিলাম, এমন সময় আমার মা উম্মে রুমান আমার কাছে এলেন। তিনি আমাকে ডাকলেন, ফলে আমি তাঁর কাছে গেলাম কিন্তু আমি জানতাম না তিনি আমাকে কি বলতে চাইছেন। তিনি আমাকে হাত ধরে ঘরের দরজায় দাঁড় করিয়ে দিলেন। আমি হাঁপাচ্ছিলাম। যখন আমার শ্বাসক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হলো তখন তিনি পানি এনে আমার মুখ-হাত মুছে দিলেন। অতঃপর তিনি আমাকে গৃহাভ্যন্তরে নিয়ে গেলেন। গৃহে আমি কতিপয় আনসারি মহিলাকে দেখলাম। তাঁরা বলছিলেন : “প্রাণঢালা শুভেচ্ছা, আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ এবং সৌভাগ্য”। অতঃপর তিনি আমাকে তাঁদের হাতে ছেড়ে দিলেন আর তাঁরা আমাকে প্রস্তুত করলেন (বিবাহের জন্য)। অপ্রত্যাশিতভাবে আল্লাহ্‌র নবি (সঃ) আমার নিকট সেদিন পূর্বাহ্নে এলেন এবং আমার মা আমাকে তাঁর হাতে সমর্পণ করলেন। সেই সময় আমি নয় বছরের মেয়ে ছিলেম। (সহি বুখারি : ৪৭৩৮)   

 

আবু হিশাম বর্ণনা করছেন : “নবি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের মদিনায় হিজরতের তিন বছর পূর্বে খাদিজা (রাঃ) মৃত্যুবরণ করেন। অতঃপর তিনি প্রায় দুই বছর পর আয়েশা (রাঃ)-কে বিবাহ করেন যখন তাঁর বয়স ছিল ছয় বছর এবং তিনি সেই বিবাহকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেন যখন তিনি নয় বছরের হন”।(সহি বুখারি, ৫ম খণ্ড, অধ্যায় : ৫৮, হাঃ ২৩৬) 

 

আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করছেন : রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম আমাকে বিবাহ করেন যখন আমার বয়স ছিল ছয় বছর এবং আমি তাঁর গৃহে প্রবিষ্ট হই যখন আমি নয় বছর বয়সে উপনীত হই। (সহি মুসলিম : ৩৩১০)

 

আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করছেন : রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বিবাহ করেন যখন আমার বয়স ছিল সাত বছর এবং বউরূপে স্বগৃহে নিয়ে যান যখন তিনি নয় বছরের ছিলেন এবং সেসময় তাঁর পুতুলগুলি তাঁর সঙ্গেই ছিল; আর যখন তিনি (নবি (সঃ) মৃত্যুবরণ করেন তখন তাঁর বয়স ছিল ১৮ বছর। (সহি মুসলিম : ৩৩১১)

 

আয়েশার কত বছর বয়সে বিয়ের নির্জনবাস সুসম্পন্ন হয়েছিল ?

প্রথমেই এটা বোঝা একান্ত দরকার যে, ১৪০০ বছর আগের অবস্থা এখন থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল, সময় বদলেছেআর পরিবর্তিত হয়েছে মানুষও। ১৪০০ বছর পূর্বে আরব সমাজে বাল্যবিবাহ ব্যাপক ছিল, ছোটো মেয়েদের বিবাহ খুব সাধারণ ব্যাপার ছিল। সত্যি বলতে কি, তাদেরকে ছোটো মেয়ে মনে করা হত না, বরং সেসময় তারা যুবতি মহিলা বলে বিবেচিত হত।

 

একটি ঐতিহাসিক সত্য যে, ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকায় নয় থেকে চোদ্দ বছর বয়সী মেয়েদের বিবাহ হয়ে যেত। এও বাস্তব সত্য যে, এক শতাব্দীর কিছু পূর্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও দশ বছরের মেয়েদের বিবাহ দিয়ে দেওয়া হত। (বিভিন্ন প্রমাণ নিম্নে দেওয়া হচ্ছে)

এই ঘটনাগুলি সত্ত্বেও কোনো ইতিহাসবিদ এই দাবি করেন না যে, এই সমস্ত লোক ছিল বিকৃত মস্তিষ্ক ও বিকারগ্রস্থ। বরং যারা এহেন দাবি করে তাদের সম্পর্কে ইতিহাসবিদগণ বলেন যে, তারা উদ্ধত এবং তাদের কোনো বুদ্ধিবৃত্তি ও ইতিহাসের জ্ঞান নেই।

 

কোনো মুসলিম সূত্র হতে এই তথ্য পাওয়া যায় না যে, তৎকালীন সমাজের কেউ আয়েশা (রাঃ)-এর বাল্যবয়সের জন্য এই বিবাহের সমালোচনা করেছে।  পক্ষান্তরে নবি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে আয়েশার বিবাহের প্রতি আয়েশার পিতা আবুবাক্‌র উৎসাহ প্রদান করেছিলেন এবং বিশাল আকারে উম্মত তাকে স্বাগত জানিয়ে ছিল।

 

তাছাড়া আয়েশার সঙ্গে নবির বিবাহে যে কয়েকটি বিষয়ের প্রতি মানুষ লক্ষ করবে তা হলো : বিবাহের কাজ পূর্ণতা লাভ করেছিল যখন আয়েশার বয়স ছিল নয় বছর, যখন ছয় বছর ছিল তখন নয় আর এর পশ্চাতে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে। এর কারণ হচ্ছে যে, আয়েশা নয় বছর বয়সে বয়ঃসন্ধিতে উপনীত হয়েছিলেন আর ইসলামের দৃষ্টিতে কোনো মেয়ে যখন বয়ঃসন্ধিতে উপনীত হয় তখন তাকে মহিলা হিসেবে বিবাহের উপযুক্ত বলে গণ্য করা হয়।  

 

বিবাহ নিছক শারীরিক বাসনার জন্য ছিল না

তিনি (সঃ) তাঁকে বিবাহ করার বিষয়ে একটি স্বপ্ন দেখেছিলেন। সহি বুখারি হাদিসে আয়েশার সূত্রে প্রমাণিত আছে : রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বললেন : “আমার একটি স্বপ্নে তোমাকে দুবার দেখানো হয়েছে। আমি দেখলাম : এক টুকরো রেশমে আবৃত আছ, এবং বলা হলো : এটা তোমার স্ত্রী। আমি তাকে অনাবৃত করে দেখলাম এটা তুমিই ছিলে। আমি বললাম : যদি এটা আল্লাহ্‌র পক্ষ হতে হয় তাহলে তা ঘটবেই”। (সহি বুখারি : ৩৬৮২)

 

আয়েশার সঙ্গে রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের বিবাহ তাঁর নিজস্ব মত ছিল না। বরং এটা খাওলা বিন্‌ত হাকিম নামের একজন মহিলার অভিমত ছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল সম্বন্ধের মাধ্যমে রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের তাঁর প্রিয়তম বন্ধু আয়েশার পিতা আবু বাকরের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও বলিষ্ঠ করা।  

 

আবু বাক্‌র (রাঃ) ছিলেন ইসলামের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের ঘনিষ্টতম বন্ধু। রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের ইন্তিকালের পর তিনিই ছিলেন প্রথম ধর্মপরায়ণ খলিফা।

 

তাঁর বন্ধু আবু বাকরের প্রতি তাঁর অনুরাগ ওই প্রস্তাব গ্রহণের প্রতি তাঁকে উদ্বুদ্ধ করেছিল আর এর উদ্দেশ্য ছিল তাঁর তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের বলিষ্ঠকরণ।

 

এও উল্লেখ্য যে, রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে বিবাহের পূর্বে জুবায়ের বিন মুতয়িম নামে এক ব্যক্তি সাথে আয়েশার বিবাহের চুক্তি হয়েছিল। যদিও আবু বাকর (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন বলে জুবায়েরের পিতামাতা ওই চুক্তি বাতিল করেছিল।

 

এখান থেকে এও ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, তৎকালীন আরবে বাল্যবিবাহ খুব সাধারণ এবং ব্যাপক প্রচলিত প্রথা ছিল, কেউ তা অস্বীকার বা তাতে আপত্তি করত না। তাছাড়া বিবাহের পর আয়েশা (রাঃ) রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের জীবনে উচ্চস্থান অধিকার করেছিলেন।

 

আরবের প্রচলিত কর্মকাণ্ড

এটাও ছিল তৎকালীন আরবের স্বাভাবিক ঐতিহ্য

ইমাম শাফিয়ী বলছেন : “ইয়ামানে অবস্থানকালী নয় বছরের অনেক এমন মেয়ের সাথে আমার আকস্মিক সাক্ষাত ঘটেছে যাদের ঋতুস্রাব হত”।(সিয়ারুল আ’লাম আল-নুবালা, ১০ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৯১)

 

ইমাম বায়হাকিও ইমাম শাফিয়ীর উক্তি বর্ণনা করছেন : “আমি (ইয়ামানের) সানা শহরে এক নানীকে দেখেছি, তখন তার বয়স ছিল ২১ বছর। নয় বছর বয়সে তার ঋতুস্রাব শুরু হয় এবং দশ বছর বয়সে সে সন্তানের জন্ম দেয়”। (সুনানে বায়হাকি কুবরা : ১/৩১৯)

 

ইবনুল জাওযিও ইবনে উকাইল এবং উবায়েদ আল-মাহ্‌লভি হতে অনুরূপ ঘটনা বর্ণনা করেছেন : আব্বাদ ইবনে আব্বাদ আল-মাহলভি বলছেন : “আমি মুহ্‌লাভার একটি মহিলাকে প্রত্যক্ষ করেছি যে আঠারো বছর বয়সে নানী হয়েছিল। সে তার (মেয়ে সন্তানের) জন্ম দিয়েছিল নয় বছর বয়সে এবং তার মেয়েও একটি সন্তানের জন্ম দেয় নয় বছর বয়সে, এভাবে মহিলাটি আঠারো বছর বয়সে নানী হয়ে যায়”। (তাহ্‌ক্বীক্ব ফী আহাদিস আল-খিলাফ, ২য় খণ্ড, পৃঃ ২৬৭)

 

খ্রিষ্টান ধার্মিক ব্যক্তিবর্গ, রাজা, রাজকীয় লোক এবং গণ্যমান্যদের বিবাহ

জোশেফের সঙ্গে মেরির বিবাহ, ক্যাথোলিক ইন্সাইক্লোপিডিয়া বলছে :

 “...... মেরিকে বিবাহ করতে একজন শ্রদ্ধেয় মানুষ, সেসময় তাঁর (মেরির) বয়স ১২ থেকে ১৪ বছর, জোশেফ যাঁর বয়স সেসময় ৯০ বছর, প্রস্থান করলেন......”।  (http://www.newadvent.org/cathen/08504a.htm)

 

 “ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৪ বছর এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১২ বছর বিবাহযোগ্য বয়স, অকার্যকর রাখা শাস্তিযোগ্য (যতক্ষণ না স্বাভাবিক বয়ঃসন্ধি বছরগুলির চাহিদা পূরণ করে [অর্থাৎ যদি বয়ঃসন্ধি ১২ বছরের আগে ঘটে])...। এটা ইংল্যান্ড, স্পেন, পর্তুগাল, গ্রীকের ধর্মসম্মত বয়স (আয়োনিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এর ব্যতিক্রম, ওখানে ওই বয়স ১৬ এবং ১৪), এমনকি অস্ট্রেলিয়ার ক্যাথোলিকদের নিকট সেটা ধর্মসম্মত বয়স। পরন্তু, ১৪ এবং ১২ বছরের ধর্মসম্মত বয়সটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশে এখনো বিরাজ করছে, তবে অন্যান্য জায়গায় সংবিধান অনুযায়ী তা বাড়ানো হয়েছে”।

(Catholic Encyclopedia, http://www.newadvent.org/cathen/01206c.htm)

 

অন্যত্র, ক্যাথলিক এনসাইক্লোপিডিয়া বলে: 

“সাধারণ আইনে, যে বয়সে ছোটোরা বিবাহের উপযুক্ত হয় যা সম্মতির বয়স হিসেবে পরিচিত, তা নির্ধারিত হয় ছেলেদের জন্য ১৪ বছর এবং মেয়েদের জন্য ১২ বছর। সাত বছরের কম বয়সে উভয়ের বিবাহ বাতিল ছিল, কিন্তু সাত এবং সম্মতির বয়সের (ছেলেদের জন্য ১৪ এবং মেয়েদের জন্য ১২ বছর) মাঝামাঝি সময়ে তারা একটি অসম্পূর্ণ বিবাহের চুক্তি করতে পারে যা বাতিলযোগ্য হলেও একান্তভাবে বাতিল নাও হতে পারে। (Catholic Encyclopedia, http://www.newadvent.org/cathen/09691b.htm)

 

যদিও বারো বছর সাধারণ নির্দেশিকা ছিল, তবে খ্রিষ্টান ফাদারদের জন্য তার পূর্বেই তাদের কন্যাদের বিবাহ দেওয়ার অনুমতি ছিল। আমরা পড়ি :

মধ্যযুগীয় খ্রিষ্টানগণ নারী-বিবাহের জন্য বারো বছরের বয়সকেই বজায় রেখেছিল। তবে এই নিম্ন সময়সীমাই চুড়ান্ত ছিল না। প্রাকৃতিক আইন যুক্তিবিজ্ঞান ব্যবহার করে ক্যাথোলিক কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত দেয় যে, যে চরম নির্ণায়ক বিবাহের জন্য সন্তানের প্রস্তুতি এবং যৌনসম্পর্ককে নির্ধারণ করে তা হলো বয়ঃসন্ধির সূত্রপাত, এই ধরনের বয়স একান্ত জরুরি নয়। এক ক্যাথোলিক বিদ্বানের অভিমত : “যদি সন্তোষজনকভাবে প্রমাণিত হয় যে, ছেলে তার ১৪ বছর বয়স পূর্ণ করার পূর্বেই কিংবা মেয়ে তার ১২ বছর বয়স পূর্ণ করার পূর্বেই বয়ঃসন্ধিতে সত্যিসত্যিই উপনীত হয়েছে তাহলে ব্যক্তিবিশেষ একটি বৈধ বিবাহের বন্ধনে তাদেরকে আবদ্ধ করতে পারে”।(Mark E. Pietrzyk, http://www.internationalorder.org/scandal_response.html)

 

ইহুদি আইনের ন্যায় খ্রিষ্টান আইন বিবাহের নিম্ন সময়সীমা এবং চরম নিম্ন সময়সীমার মধ্যে পার্থক্য করেছে। বিবাহের নিম্ন সময়সীমা বারো বছর, যাকে সম্মতির বয়স বলা হয়; অন্য শব্দে, একটি মেয়ে নিজের বিবাহের ব্যবস্থা নেওয়ার পূর্বে তাকে বারো বছরের হতে হবে। কিন্তু বিবাহের চরম নিম্ন সময়সীমা সাত বছর যখন তার পিতা তার অনুমতি ছাড়াই তার বিবাহের ব্যবস্থা করতে পারে।

 

১। সেন্ট আউগুস্টাইন : সেন্ট আউগুস্টাইন, খ্রিস্টান ধর্মতত্ত্ব প্রণয়নে যাঁর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব ছিল, একটি দশ বছর বয়সী মেয়ের বাগদত্তা ছিলেন। সেসময় তাঁর বয়স ছিল ৩১ বছর। তার শরীর পরিণত হোক, এই অপেক্ষায় তিনি দুবছর ছিলেন। তারপর মেয়েটি বারো বছর বয়সে সেন্ট আগুস্টাইনের সংস্পর্শে যায়। এরপরও কীভাবে খ্রিস্টানরা নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের উপর এই বলে আক্রমণ করতে পারে যে, তিনি মাত্র নয় বা দশ বছর বয়সী আয়েশাকে বিবাহ করেছিলেন, অথচ তার শ্রদ্ধাভাজন সেন্ট আউগুস্টাইন একটি দশ বছরের মেয়ের বাগদত্তা হয়েছিলেন ?

আমরা পড়ি :

একজন পূর্ণবয়স্ক পুরুষ এবং একটি অল্প বয়সী বালিকার মধ্যে এই ধরনের বাগ্‌দানের একটি উদাহরণ সেন্ট আউগুস্টাইনের (৩৫৪-৪৩৯ খ্রিঃ) বাগ্‌দান। ৩১ বছর বয়সে আউগুস্টাইন একটি দশ বছরের মেয়ের সঙ্গে বাগ্‌দান করেছিলেন।

(Mark E. Pietrzyk, http://www.internationalorder.org/scandal_response.html)

 

২। সেন্ট আগ্নেস : ইতিহাসের আরেকজন অত্যন্ত বিখ্যাত খ্রিস্টান মহাপুরুষ সেন্ট আগ্নেস। তিনি সতীত্বের পৃষ্ঠপোষক সেন্ট হিসেবে পরিচিতা ছিলেন। তিনি বারো বছরেরও কম বয়সে বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন। এরপরও খ্রিস্টানরা তাদের নাক তুলে যখন আমরা মুসলমানরা বলি যে, আয়েশা (রাঃ) ওই একই রকম বয়সে বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন ?   

 

Domestic-Church.com মন্তব্য করে :

গ্রীক ভাষায় সেন্টা আগ্নেস নামের অর্থ সতী বা পবিত্র এবং ল্যাটিন ভাষায় এর অর্থ নির্দোষ শিশু বা প্রতারিত লোক। তিনি সর্বদা চার্চ কর্তৃক পবিত্রতার বিশেষ পৃষ্ঠপোষিকা হিসেবে গণ্য হয়েছেন। তিনি খুব ছোটো বেলায় ডাইওক্লেতিয়ানের নিগ্রহের শিকার হয়ে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। ডাইওক্লেতিয়ান তার খ্রিস্টান নিপীড়ন শুরু করেছিল ৩০৩ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে। যখন তিনি মৃত্যুবরণ করেন তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১২ বা ১৩ বছর। এই তরুণ বয়সেই তাঁর ধনসম্পদ ও সৌন্দর্য রোমের সম্ভ্রান্ত তরুণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তারা তাঁকে বিয়ে করার জন্য পরস্পপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেছিল। (Domestic-Church.com, http://www.domesticchurch.com/CONTENT.DCC/19980101/SAINTS/STAGNES.HTM)

 

৩। আন্ডেচসের সেন্ট হেডউইগ : সেন্ট হেডউইগ খ্রিস্টানদের দ্বারা অনাথদের অভিভাবক সেন্টস্বরূপ সম্মানিত হয়েছিলেন। বারো বছর বয়সে তাঁর বিবাহ দেওয়া হয়েছিল সিলিজিয়ার হেনরি ১-এর সঙ্গে।

 

৪। কস্কিয়ার সেন্ট রিতা : তিনি খ্রিস্টানদের নিকট নৈরাশ্যপূর্ণ লোকদের অভিভাবক সেন্ট হিসেবে গণ্য করা হত। বারো বছর বয়সে পাওলা মানসিনি নামক একজন লোকের সঙ্গে তাঁর বিয়ের কথা পাকা হয়।

 

৫। সেন্ট মেরি অফ যিসাস ক্রুসিফাইড : তেরো বছর বয়সে তাঁর বিবাহের কথা পাকা করা হয়।

 

৬। পর্তুগালের সেন্ট এলিজাবেথ : তিনি ছিলেন সেন্ট ফ্রান্সিসের তৃতীয় আদেশের রক্ষাকর্তা। বারো বছর বয়সে তাঁর বিবাহ হয়েছিল।

 

৭। সেন্ট জোসেফ : যিশুর অনুমোদিত পালক পিতা, তিনি ৯০ বছর বয়সে বারো বছরের মেরিকে বিবাহ করেছিলেন। কারো কারো দাবি : সেসময় তাঁর বয়স ৯০ নয়, বরং ৩০ বছর ছিল। কিন্তু অনস্বীকার্য সত্য যে, তিনি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ হয়ে বারো বছরের মেয়েকে বিবাহ করেছিলেন।

 

শ্রদ্ধাভাজন খ্রিস্টান সেন্টদের আরও অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে ......।

১। দ্বিতীয় কিং রিচার্ড ত্রিশ বছর বয়সে একজন ফরাসি রাজকুমারীকে বিবাহ করেছিলেন। তাঁর নাম ইসাবেলা, সেসময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র সাত বছর। http://en.wikipedia.org/wiki/Isabella_of_Valois

 

২। মিলানের জাঁদরেল মহিলা স্যাভয় বিয়াঙ্কার বিবাহ হয়েছিল তেরো বছর বয়সে। http://www.academia.edu/990174/Medieval_Marriage

 

৩। থিওডোরা কমনেনার তেরো বছর বয়সে বিবাহ হয়েছিল তৃতীয় কিং ব্যাল্ডউইনের সঙ্গে যাঁর বয়স সেসময় তাঁর দ্বিগুণ বেশি ছিল। http://www.academia.edu/990174/Medieval_Marriage

 

৪। প্রথম কিং আন্ড্রোনিকোস কোমনেনোস, বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের নির্ভীক খ্রিস্টান নেতা, ৬৪ বছর বয়সে ফ্রান্সের বারো বছরের আগ্নেসকে বিয়ে করেছিলেন। http://www.academia.edu/990174/Medieval_Marriage

http://en.wikipedia.org/wiki/Jeanne_d'Albret

 

৫। পর্তুগালে রাজা ডেনিস পর্তুগালের বারো বছর বয়সী সেন্ট এলিজাবেথকে বিবাহ করেছিলেন।

 

৬। গিরোলামা রিয়ারিও, ইমোলা ও ফোরলির প্রধান ধর্মযাজক নয় বছরের ক্যাটারিন স্ফোর্জাকে বিবাহ করেছিলেন।

 

৭। ন্যাভেরার তৃতীয় জিয়ান্নার বিবাহ দেওয়া হয়েছিল তেরো বছর বয়সে।  http://en.wikipedia.org/wiki/Jeanne_d'Albret

 

৮। জিওভান্নি স্ফোর্যা তেরো বছরের লিওক্রিজিয়া বোরজিয়াকে বিবাহ করেছিলেন। http://en.wikipedia.org/wiki/Giovanni_Sforza

 

৯। নরওয়ের ষষ্ঠ রাজা হাকোন দশ বছরের রাণী মার্গারেটকে বিবাহ করেছিলেন। http://en.wikipedia.org/wiki/Margaret_I_of_Denmark

 

১০। এসেক্সের কাউন্ট আগ্নেসের বিয়ের পাকা কথা হয়ে গিয়েছিল মাত্র তিন বছর বয়সে এবং বারো বছর বয়সে তার বিবাহ হয়েছিল এমন একজনের সঙ্গে যার বয়স ছিল প্রায় পঞ্চাশ বছর। http://en.wikipedia.org/wiki/Isabella_of_Angoul%C3%AAme

 

১১। ওয়েলসের প্রিন্স এডওয়ার্ড বিবাহ করেছিলেন ফরাসির রাজকন্যা ইসাবেলাকে যার বয়স ছিল মাত্র সাত বছর।

 

১২। দ্বিতীয় রোমানোস ইতালির রাজকন্যা বার্থাকে (নতুন নাম ইউডোকিয়া) বিবাহ করেছিলেন, সেসময় রাজকন্যার বয়স ছিল মাত্র চার বছর।  

 

১৩। স্টেফিন মিলুটিন, সার্বিয়ার ক্রাল সম্রাট দ্বিতীয় এন্ড্রোনিকোসের কন্যা সিমোনিসকে বিবাহ করেছিলেন। বিবাহের সময় তার বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর এবং স্টেফিনের বয়স ছিল পঞ্চাশ বছর।

 

১৪। প্রথম এডওয়ার্ড নয় বছর বয়সের ক্যাস্টিলের এলানরকে বিবাহ করেছিলেন।

 

১৫। রিচার্ড শ্রিয়ুজবারি, চতুর্থ রাজা এডওয়ার্ড-এর পুত্র, নরফোল্কের পাঁচ বছরের আন্নে মউব্রেকে বিবাহ করেছিলেন। http://en.wikipedia.org/wiki/Richard_of_Shrewsbury,_1st_Duke_of_York

 

১৬। মেরি স্টেওর্ট অষ্টম হেনরিকে বিবাহ করেছিলেন যখন তার বয়স ছিল মাত্র ছয় বছর। http://en.wikipedia.org/wiki/Mary,_Queen_of_Scots

এছাড়া আরও অনেক উদাহরণ আছে ……।

 

বিবাহের সময় নবি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের শত্রুদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?

কুরাইশ গোত্রের লোক নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামকে অপমান ও অসম্মান করতে কোনো সুযোগ হাতছাড়া করেনি। তারা তাঁর প্রতি অপমানের বারি বর্ষণের সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে পেয়েছিল এই বিবাহকে। কিন্তু তারা এই বিবাহ-চুক্তির মধ্যে অন্যায় কিছু দেখেনি এবং তারা আয়েশাকে নবির বিবাহের প্রস্তাবের সংবাদটিকে স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিতরূপেই নিয়েছিল।

 

আয়েশা (রাঃ) কখনো অসম্মতি প্রকাশ করেননি অথবা আয়েশার বিবাহ ও সম্মতি

আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো, আয়েশার সহস্রাধিক বর্ণনার মধ্যে একটিও এমন বর্ণনা পাওয়া যায় না যা থেকে বোঝা যে, তিনি বিবাহতে অসন্তুষ্ট বা অসম্মত ছিলেন। তাই এই সম্পর্কে তাঁর কোনো অসুবিধা ছিল না। সত্যি বলতে কি, বিভিন্ন রিওয়ায়াত থেকে স্পষ্ট যে, তিনি নবি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন, একনকি তাঁর পাশে কাউকে দেখলে তিনি ইর্ষান্বিত হতেন। এটা থেকে কি প্রমাণিত হয় না যে, তিনি এই বিবাহে অত্যন্ত খুশি ছিলেন ? সুতরাং, যখন তাঁর নিজের কোনো সমস্য নেই তাহলে তা নিয়ে অন্যদের উদ্বেগ কেন ?

 

আয়েশা (রাঃ) এই বিবাহতে অত্যধিক খুশি ছিলেন। তিনি হয়ে ওঠে ছিলেন নবি (সাঃ)-এর সর্বশ্রেষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক এবং তিনি তাঁর নিকটে ইসলামের বিষয়ে অনেক কিছু শিক্ষালাভ করেছিলেন। তিনি ছিলেন তাঁর সময়ের অনেক পুরুষ ও নারীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা। তাঁর পিতামাতাও ছিলেন এই বিবাহতে যথেষ্ট সন্তুষ্ট। নবি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সমসাময়িক, বন্ধু হোক বা শত্রু, কেউ এই বিবাহতে বিস্মিত হয়েছিল বা এর বিপক্ষে অভিযোগ করেছিল, এমন কোনো তত্ত্ব পাওয়া যায় না।

 

বিবাহের পশ্চাতে মহাপ্রজ্ঞা

নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে আয়েশার বাল্যবিবাহই তাঁকে তাঁর (নবির) জীবনের ব্যক্তিগত যাবতীয় বিষয়ের প্রত্যক্ষদর্শী করেছিল এবং পরবর্তী প্রজন্ম পর্যন্ত পৌঁছানোর সুযোগ করে দিয়েছিল। তরুণ বয়সে মানুষের তীক্ষ্ণ মেধা এবং পর্যবেক্ষণের বিশাল অনুভূতি থাকে। অতঃপর তিনি নবি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুর পর ৪৬ বছর জীবিত ছিলেন এবং ওই সময়কালে তিনি মানুষকে শিক্ষা দিতে থাকেন ইসলামের বিভিন বিষয়, বিশেষত পারিবারিক এবং বৈবাহিক জীবনের বিষয়াদি।

 

বিবাহ আয়েশাকে ধর্মীয় ও দৈহিকভাবে নবি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের নিকটবর্তী করেছিল যা তাঁকে সমগ্র মুসলিমজাতি, বিশেষত মহিলাদের জন্য চিরস্থায়ী দৃষ্টান্ত করে তুলেছে। তিনি আধ্যাত্মিক শিক্ষিকা ও পণ্ডিত হিসেবে বিকশিত হয়েছিলেন, কারণ তিনি ছিলেন সাতিশয় বুদ্ধিমতি ও জ্ঞানী। তাঁর গুণাবলি নবি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের কার্য তথা ইসলামের বিষয়ে সাহায্য করেছিল। মুমিনদের মা,আয়েশা (রাঃ)স্ত্রী ও মায়েদের জন্য শুধুমাত্র একটি মডেল ছিলেননা, বরং তিনি ছিলেন কুরআনের একজন ভাষ্যকার, হাদিসে রাবি এবং ইসলামি আইনজ্ঞ। 

 

তিনি কমপক্ষে ২,২১০টি হাদিস বর্ণনা করেছেন যা মুসলমানদেরকে শেষনবি (সাঃ)-এর দৈনন্দিন জীবন এবং আচার-ব্যবহারের মধ্যে অন্তর্দৃষ্টি দান করে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ সংরক্ষণে সাহায্য করে।

 

ইসলামের পণ্ডিতগণের দাবি, তাঁকে বাদ দিলে ইলমে হাদিসের (ইসলাম ও হাদিসের জ্ঞান) অর্ধেকাংশ বিনষ্ট হয়ে যেত।

 

আয়েশা (রাঃ) সর্বদা সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বহু মানুষকে ইসলাম শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি ছিলেন ইসলামি আইনের অনেক বিষয়ে, বিশেষ করে মহিলা সংক্রান্ত বিষয়াদির বিশ্বস্ত সূত্র।

 

শিক্ষিকা হিসেবে তিনি সুস্পষ্ট ও আকর্ষণীয় বচনভঙ্গির অধিকারী ছিলেন। আল-আহ্‌নাফ বাগ্মিতায় তাঁর ক্ষমতাকে চরম ও সর্বশ্রেষ্ঠ বলে বিবরণ দিয়েছেন। তিনি বলছেন : “আজ পর্যন্ত আমি আবু বাক্‌র, উমার, উসমান ও আলি এবং খলিফাদের (রাঃ) বক্তৃতা শুনেছি, কিন্তু আয়শার মুখে যা শুনেছি তার থেকে অধিক সুন্দর ও উৎসাহব্যঞ্জক বক্তৃতা আর কারো মুখে শুনেনি”।  

 

আবু মুসা আশআরি (রাঃ) বর্ণনা করছেন : রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : “আয়েশার মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব অন্যান্য মহিলাদের উপর ঠিক তেমন যেমন সারিদের (মাংস ও রুটির মিশ্রনে তৈরি খাদ্যবিশেষ) শ্রেষ্ঠত্ব অন্যান্য খাদ্য সামগ্রীর উপর। পুরুষদের মধ্যে অনেকেই পূর্ণতার স্তরে পৌঁছেছে কিন্তু নারীদের মধ্যে ইমরানের কন্যা মারয়াম এবং ফিরাউনের স্ত্রী আসিয়া ব্যতীত অন্য কেউ পূর্ণাঙ্গ হয়নি”। (সহি বুখারি : ৩২৩০)

 

মুসা ইবনে তালহা (রাঃ) বলছেন : “আয়েশা থেকে বেশি বাগ্মী ও বাকপটু আমি কাউকে দেখিনি”।(মুস্তাদরাক হাকিম, ৪র্থ খণ্ড, পৃঃ ১১)

 

এখান থেকে ঐশী প্রজ্ঞা পরিষ্কার হয়ে যায়, কারণ এটা স্বয়ং রসূলুল্লাহ্‌র পক্ষ হতে ছিল না, বরং এই বিবাহের প্রতি আল্লাহ্‌ তাআলার নির্দেশ ছিল। আয়েশা নিজেই বর্ণনা করছেন : রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন : “তোমাকে বিবাহ করার পূর্বে আমার স্বপ্নে তোমাকে দুবার দেখানো হয়েছে। আমি দেখলাম, একজন ফেরেশ্তা তোমাকে এক টুকরো রেশমের কাপড়ে আবৃত করে নিয়ে আছে; আমি তাঁকে বললাম : খোলো, অতঃপর দেখলাম : এটা তুমিই ছিলে”। (সহি বুখারি : ৬৪৯৫)

 

যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে, আয়েশা কীসের জন্য বিখ্যাত ছিলেন ?

তাঁর কী বিশেষত্ব ছিল ?

সৌন্দর্য ?

ধনসম্পদ ?

না ! এটা ছিল ধর্ম ! এখান থেকেই ঐশী যুক্তি প্রমাণিত হয়।

 

ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মে বিবাহের বয়স

তাদের উচিৎ ইহুদি ধর্মের উপরও ফোকাস করা যা তিন বছর একদিনের মেয়ের বিবাহকে অনুমোদন করে।  

 

ইহুদি ওয়েবসাইট, Jewfaq.org, উল্লেখ আছে:

“ইহুদি আইনে বিবাহের বয়সের নিম্ন সীমা ছেলেদের জন্য ১৩ বছর এবং মেয়েদের জন্য ১২ বছর, তবে বাগ্‌দান তার পূর্বেই হতে পারে, আর মধ্যযুগে প্রায়ই এরকম ঘটেছে...”। (JewFaq.org, http://www.jewfaq.org/marriage.htm)

 

বারো বছর বয়স বয়ঃসন্ধির দ্বারপ্রান্ত। ইহুদি আইনে এই বয়সে বিবাহ কেবল অনুমোদিতই নয়, বরং সক্রিয়ভাবে এর প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয় এবং পিতাদের উপদেশ দেওয়া হয় তাদের প্রাপ্তযৌবন কন্যাদের দ্রুত বিবাহ দিতে।

 

অনেক ইহুদি বিদ্বানের অভিমত, কোনো মেয়ে যেমনই বয়ঃসন্ধিতে উপনীত হয় কোনো দেরী না করে তার বিবাহ করে দেওয়া উচিৎ। ইহুদি এন্সাইক্লোপিডিয়াতে উল্লেখ আছে :

রব্বিদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী বাইবেলের প্রথম ইতিবাচক আজ্ঞা হলো মানব প্রজাতির প্রচার সংক্রান্ত। তাই মনে করা হয় যথাসম্ভব দ্রুত বিবাহ করা প্রত্যেক ইস্রায়িলির দায়িত্ব......। একাংশ দৃঢ়স্বরে বলে যে, বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছতেই সন্তানদের বিবাহ দেওয়া উচিত”। (Jewish Encyclopedia, http://www.jewishencyclopedia.com/view.jsp?letter=M&artid=216)

 

ওল্ড টেস্টামেন্টে রেফকার সঙ্গে ইসহাক বিন ইব্রাহিম (আঃ)-এর বিবাহের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। বিয়ের সময় রেফকার বয়স ছিল তিন বছর। জিনেসিস-তে উল্লেখ আছে : ইসহাকের জন্মের সময় সারার বয়স ছিল ৯০ বছর। তখন ইব্রাহিম মাটিতে মুখমণ্ডল রেখে মনেমনে বলেছিলেন : “এমন একজন মানুষের কি কোনো সন্তান জন্মলাভ করতে পারে যার বয়স ১০০ বছর ? আর সারা কি কোনো সন্তানের জন্ম দেবে যখন তার বয়স ৯০ বছর”। (জিনেসিস ১৭:১৭)

 

যে বছর সারা মৃত্যুবরণ করেন সেই বছরই রেফকা জন্মলাভ করেন : “বথুয়েল রিবেকার পিতা হলেন। মিলকাহ্‌ ইব্রাহিমের ভ্রাতা নূহ সহ আট সন্তানের জন্ম দেন”। পরের অধ্যায়ের প্রথম অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে : “সারা ১২৭ বছর জীবিত ছিলেন” অর্থাৎ ইসহাক সেসময় ৩৭ বছরের ছিলেন এবং রেফকা ছিলেন একদম শিশু।

 

যখন ইসহাক ৪০ বছরে উপনীত হলেন এবং রেফকা তিন বছরে তখন ইসহাক তাঁকে বিবাহ করেন। “আর তিনি চল্লিশ বছরের ছিলেন যখন তিনি পদ্দান অরামের অরামীয় এবং অরামীয় লবানের বোন বাথুয়েলকে বিবাহ করেছিলেন”। (জিনেসিস ২৫:২০)তালমুদ (গ্রন্থ) এমন বিবাহ সম্বন্ধ তৈরির অনুমতি দিত যদিও মেয়ে বাচ্চা হত। এতে তারা নিম্নের শিক্ষার অনুসরণ করত :

স্যানহেডরিনের (মহাসভার) ৫৫তম আজ্ঞা বর্ণনা করেছে : “একটি তিন বছর একদিনের কুমারিকে রতিক্রিয়া দ্বারা বিবাহের মধ্যে আনা যেতে পারে”। তালমুদ স্যানহেডরিনের (মহাসভার) ৫৪তম আজ্ঞা বর্ণনা করেছে : নয় বছরের কম বয়সী কিশোরের সঙ্গে পেডেরাস্টি (পেডেরাস্টিবলতে বোঝায় কোনো প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের সঙ্গে তাঁর নিকটাত্মীয় নয় এমন কোনো কিশোর বালকের (প্রধানত যৌন) সম্পর্ক) তার থেকে বড়ো কিশোরের সঙ্গে পেডেরাস্টির মতো গণ্য করা হয় না”।  

 

তালমুদ খেথুবথের ১১শ আজ্ঞায় উল্লেখ আছে : একটি পূর্ণবয়স্ক মানুষ এবং একজন যুবতীরমধ্যে যৌন মিলনএকটিসাধারণ বিষয়”। তাছাড়া সাঈদ রাবি জোসেফ লিখছেন : “তিন বছর একদিনের মেয়ে যৌনমিলন করতে পারে”। 

 

পরিশেষে আমরা মার্ক ই. পিটারযাইকের উক্তি দিয়ে এই প্রসঙ্গ বন্ধ করছি :

তালমুদে উল্লেখ আছে : বিবাহের জন্য প্রস্তাবিত বয়স নারীদের জন্য বারো বছরের কিছু বেশি এবং পুরুষদের জন্য তেরো বছর। এর কম বয়সে বিবাহে সাধারণত অসম্মতি প্রকাশ করা হয়। তবে পিতা নিজের মেয়ের বাল্যবয়সেই অন্য পুরুষের সাথে বাগ্‌দান করতে পারে, এবং যৌনমিলনকে বিবাহচুক্তির মোহরের বৈধ উপায় হিসেবে গণ্য করা হয়। যৌনমিলনের মাধ্যমে বিবাহচুক্তির বয়সসীমা নির্ধারণ বিভৎস ঘৃণ্য। তালমুদে উল্লেখ আছে : “যৌনমিলনের মাধ্যমে একটি তিন বছর একদিন বয়সী মেয়ের বিবাহচুক্তি করা যেতে পারে”। (Mark E. Pietrzyk, http://www.internationalorder.org/scandal_response.html)

 

সুতরাং ইহুদি ধর্মে একটি তিন বছরের মেয়ের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করা কোনো আশ্চর্যের বিষয় নয়, তবে একটি নয় বছরের কুমারিকে বিবাহ করার কারণে নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সমালোচনা তারা করছে কেন ?

 

হিন্দু ধর্মে বিবাহের বয়স

মনু-স্মৃতির মতো প্রসিদ্ধ হিন্দু ধর্মশাস্ত্রে আমরা পড়ি :

গৌতম (১৮-২১) – বয়ঃসন্ধির পূর্বেই একজন মেয়ের বিবাহ দেওয়া উচিত।

 

ভসিষ্ঠ (১৭.৭০) – রজঃস্রাব শুরু হওয়ার আশঙ্কা হলেই, যখন মেয়ে নগ্ন শরীরেই দৌড়ে বেড়ায় তখনই তার পিতার উচিত তার বিবাহ দিয়ে দেওয়া। কারণ বয়ঃসন্ধির পর সে গৃহে অবস্থান করলে তার পাপ পিতার উপর এসে পড়ে।

 

বৌদ্ধায়ন (৪.১.১১) – যখন কন্যা প্রায় নগ্নদেহে ঘুরে বেড়ায় তখনই তার পিতার উচিত তাকে এমন একজন লোকের হাতে তুলে দেওয়া যে সতীত্বের ব্রত ভঙ্গ করেনি এবং উত্তম চরিত্রের অধিকারী, অথবা এমন লোকের সঙ্গে হলেও যে উত্তম চরিত্র হতে নিঃস্ব; বয়ঃসন্ধিতে উপনীত হওয়ার পর কন্যাকে সে যেন গৃহে না রাখে। (মনুIX, ৮৮;  http://www.payer.de/dharmashastra/dharmash083.htm)

 

The Encyclopedia of Religion and Ethics (ধর্ম ও নৈতিকতার এনসাইক্লোপিডিয়া)-তেউল্লেখ আছে : 

“কন্যাকে বিবাহ ছাড়াই বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছতে দিলে পিতা পাপী হয় এবং মেয়েটি নিজেকে একজন সুদ্রের (নিম্ন উপজাতি) স্তরে নিপতিত করে। মনু-স্মৃতি স্বামী এবং স্ত্রীর বয়স স্থির করে যথাক্রমে ৩০ এবং ১২ অথবা ২৪ এবং ৮ বছর; বৃহস্পতির পরের কার্য এবং মহাভারতের নীতিমূলক অংশ এই ক্ষেত্রগুলিতে স্ত্রীর বয়স স্থির করে যথাক্রমে ১০ এবং ৭। পরের অংশে উল্লেখ আছে : নিম্নসীমা ৪ থেকে ৬ বছর এবং উর্ধ্বসীমা ৮ বছর। এই দিনগুলি নিছক তাত্ত্বিক ছিল না, এর পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে। (Encyclopedia of Religion and Ethics, p.450,

 

http://books.google.com/books?id=INJI4FGeLpYC&pg=PA523&lpg=PA523&dq=manu+ix+a+girl+should+be+given+in+marriage+before+puberty&source=web&ots=7WP3uyXj9V&sig=HN-O7gG0ya_0QTuwCvEUjGPQG_Y#PPA522,M1)

 

ইসলাম ধর্মে বিবাহের বয়স

ইসলাম বয়ঃসন্ধিকে বিয়ের বয়স বলে নির্ধারণ করে, কেননা এটাই বাল্য এবং যৌবনের মধ্যে প্রাকৃতিক বিভাজক রেখা। রজঃস্রাব ইঙ্গিত করে যে, একজন যুবতী মেয়ে বাল্যকাল অতিক্রম করেছে। এই বয়স বিভিন্ন রাষ্ট্রে বিভিন্ন হতে পারে, কিন্তু এটা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য, নির্বিচারে নয়।  

 

ইসলামি আইন (শারিয়াহ্‌) প্রকৃত বিবাহ সুসম্পন্ন করার কয়েক বছর পূর্বে বিবাহচুক্তি সম্পাদন করার অনুমতি দেয়। বিবাহচুক্তি প্রণীত হয় কিন্তু পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত চুক্তিটি কার্যকর হয় না। তাই যদিও বিবাহচুক্তি সম্পাদিত হয়ে যায়, তথাপি বহু বছর পর্যন্ত মেয়েকে স্বামীর হাতে সোপর্দ করা হবে না। অন্য শব্দে, একজন পিতা তার অপরিণত কন্যার বিবাহ তার বয়স হওয়ার পূর্বেই কোনো ব্যক্তির সাথে করতে পারে, কিন্তু মেয়ে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত স্বামী তার সাথে বিবাহের নির্জনবাস করতে পারবে না।  

 

ইসলামি আইনে বিবাহচুক্তি কার্যকর করার জন্য কিছু বিশেষ শর্ত আছে। তন্মধ্যে একটি শর্ত : বিবাহের নির্জনবাসের জন্য উভয়কেই বিবাহের উপযুক্ত ও পরিণত হতে হবে। যদি এই শর্তটি ব্যহত হয় তাহলে বিবাহচুক্তি স্থগিত থাকবে এবং এর কোনো প্রকৃত ব্যবহারিক প্রভাব থাকবে না, অর্থাৎ বিবাহের নির্জনবাস ততদিন পর্যন্ত স্থগিত থাকবে যতদিন না মেয়েটি তার যথেষ্ট উপযুক্ত হয়ে যায়। নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এবং আয়েশার উদাহরণে, বিবাহচুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল যখন তিনি অপরিণত ছিলেন, কিন্তু তা কার্যকর হয়েছিল তাঁর পরিণত হওয়ার পর। এজন্যই বিবাহচুক্তি সাক্ষরিত হওয়ার পর তিন বছর ধরে আয়েশা তাঁর পিতৃগৃহেই ছিলেন।

 

ইহুদি ও খ্রিস্টান আইনের ন্যায় – ইসলামি আইনেও তাদের নির্জনবাসের পরেই বিবাহ সুনিশ্চিত হয় (অর্থাৎ যখন দম্পতির মধ্যে যৌনমিলন ঘটে)। কতিপয় মুসলিম বিদ্বানের অভিমত যে, ইসলামি আইনে বিবাহের নিম্ন বয়স নয় বছর কিংবা আদ্যঋতু (রজঃস্রাবের সূত্রপাত)। কিন্তু একথা সঠিক নয়; প্রকৃতপক্ষে ইসলামে কোনো নির্দিষ্ট নিম্ন বয়সসীমা নেই।

 

বরং, ইসলামী আইন এই সহজ নীতিবাক্য অনুসরণকরে :

একজন মানুষ তার স্ত্রীর সঙ্গে তখনই যৌনমিলন করতে পারে যখন সে যৌনতার দিক থেকে এতটাই পরিপক্ক হয় যে, যৌনমিলনের ফলে সে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হয় না।

 

প্রকৃতপক্ষে এটাই সবার জন্য সবচেয়ে সুন্দর এবং সর্বব্যাপক নিয়ম। ইজমা (ঐক্য) কর্তৃক ইসলামি বিদ্বানগণ উপরে বর্ণিত নীতিবাক্যের প্রতি সম্মত হয়েছেন। অন্য শব্দে, বিবাহের বিষয়ে একমাত্র অলঙ্ঘনীয় নিয়ম হলো : একজন মানুষ তার স্ত্রীর সঙ্গে কেবল তখনই যৌনমিলন করতে পারে যখন সে যৌনতার দিক থেকে এতটাই পরিপক্ক হয় যে, যৌনমিলন করলে সে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হয় না।

 

ইহুদি ও খ্রিষ্টান ধর্মশাস্ত্রের বিশ্লেষণ

তালমুদ (ইহুদি ধর্নশাস্ত্র)-তে উল্লেখ আছে : “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাবালকত্বে পদার্পণ করার পরে পরেই স্বীয় কন্যার বিবাহ করে দেওয়া উচিত যদিও কারো ভৃত্যের সাথে হয় (তালমুদ হতে গৃহীত, পেসাচিম ১১৩এ)”।

 

বাইবেলীয় সময়ে সাবালকত্ব বলতে বোঝানো হত বয়ঃসন্ধির বয়সকে অথবা অল্প বয়সকে।

 

জোসেফের সঙ্গে মেরির বিবাহের বিষয়ে ক্যাথোলিক এন্সাইক্লোপিডিয়াতে (http://www.newadvent.org/cathen/08504a.htm), উল্লেখ আছে :

“যখন বয়স চল্লিশ বছর, তখন জোসেফ এক মহিলাকে বিবাহ করেন। কেউ কেউ বলেন তার নাম ছিল মেলচা বা এসচা আর কেউ কেউ বলেন তার নাম ছিল স্যালোম; তাঁরা একসাথে ৪৯ বছর জীবন যাপন করেন এবং তাঁদের ছয় সন্তান ছিল, দুই কন্যা এবং চার পুত্র, তাদের মধ্যে কনিষ্ঠতম ছিল জেম্‌স। তাঁর বউয়ের মৃত্যুর এক বছর পর যিহূদিয়ার মাধ্যমে পুরোহিত ঘোষণা করলেন যে, তাঁরা যিহূদা গোত্রে একজন সম্ভ্রান্ত লোককে পেতে চাই যে মেরিকে বিবাহ করবেন, সেসময় মেরির বয়স ছিল ১২-১৪ বছর। জোসেফ অভ্যর্থীদের সঙ্গে জেরুজালেম গেলেন। সেসময় তাঁর বয়স ছিল ৯০ বছর। আল্লাহ্‌ অলৌকিকতা প্রদর্শন করলেন এবং জোশেফকে তাদের পছন্দ হলো এবং দুই বছর পর অ্যানানসিয়েশনকার্যকর হলো  

বিঃদ্রঃ ক্যাথলিক এনসাইক্লোপিডিয়ারউপরওইনিবন্ধটি প্রথম থেকে তার তথ্য গ্রহণ করে।

 

তালমুদ খেথুবথের ১১শ আজ্ঞায় উল্লেখ আছে : একটি পূর্ণবয়স্ক মানুষ এবং একজন যুবতীরমধ্যে যৌন মিলনএকটিসাধারণ বিষয়”। তাছাড়া সাঈদ রাবি জোশেপ লিখছেন : “তিন বছর একদিনের মেয়ে যৌনমিলন করতে পারে”। 

 

প্রণিধানযোগ্য পয়েন্ট

অভিযোগগুলি খণ্ডনের জন্য এই কয়েকটি পয়েন্ট যথেষ্ট

১। নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের কোনো শত্রু তাঁর বিরোধিতায় এটাকে অস্ত্র হিসেবে কেন ব্যবহার করেনি। যদি বিবাহটি এতটাই অন্যায় হত তাহলে আপনি দেখতেন যে, তাঁর শত্রুরাই সর্বপ্রথম তাঁর বিরোধিতায় এটাকে ব্যবহার করছে। কিন্তু আমরা তাঁর বিপরীত দেখছি যে, তাঁর শত্রুরা কখনো একবারের জন্যও তাঁর বিরোধিতায় এই বিবাহকে একটি নেতিবাচক উপায় হিসেবে ব্যবহার করেছে।

 

২। যখন আয়েশাকে নবির হাতে সোপর্দ করা হয় তখন তাঁর পার্শ্বে যে সমস্ত মহিলা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা কেন আয়েশাকে বিয়ের শুভেচ্ছা জানিয়ে ছিলেন এবং আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন ? যদি বিবাহটি অন্যায় হত তাহলে সেখানে উপস্থিত মহিলাগণ শোক-সন্তপ্ত হতেন এবং তাঁরা আয়েশার জন্য আনন্দ প্রকাশ করতেন না। কিন্তু আমরা দেখছি, তাঁরা আয়েশার জন্য অত্যন্ত খুশি ছিলেন এবং সে বিষয়ে কোনো সমস্য বোধ করেননি।

 

৩। আয়েশা হতে একটিও এমন হাদিস কেন বর্ণিত নেই যা থেকে প্রতিভাত হয় যে, তিনি এই বিয়েতে অখুশি ছিলেন ? আয়েশা থেকে এমন একটিও হাদিস কেন বর্ণিত নেই যা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, আয়েশা অন্যায়ের শিকার হয়েছিলেন ? পক্ষান্তরে আপনি যদি আয়েশার প্রতি প্রণিধান করেন তাহলে তাঁর উপর কোনো প্রতারিত ব্যক্তির কোনো লক্ষণ আপনি পাবেন না। তিনি হয়েছিলেন ইসলামের শ্রেষ্ঠ নেত্রী, শ্রেষ্ঠ পণ্ডিত যিনি বহু মানুষকে ইসলামের বিষয়ে জ্ঞান দিতেন। এটা কি মনে হয় যে, এগুলো কোনো নির্যাতিত লোকের প্রতীক ?

 

৪। যদি আয়েশা সত্যিই অন্যায়ের শিকার হতেন তাহলে তিনি নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামকে এত কেন ভালোবাসতেন এবং অনেক সময় কেন তিনি তাঁর আশেপাশে কাউকে দেখলে ইর্ষান্বিত হতেন ? এর একটাই কারণ তিনি তাঁকে অত্যধিক ভালোবাসতেন। তবুও কি মনে হয় যে, তিনি অন্যায়ের শিকার ছিলেন ?

 

উপসংহার

পিডোফিলিয়া (বাল্য যৌন শোষণ) একটি অন্তর্মুখী শব্দ। কতিপয় রাষ্ট্র ১৬ বছর বয়সে বিবাহকে বৈধ করে, কতিপয় করে তার পূর্বে আর কতিপয় করে তার পরে। সুতরাং একটি রাষ্ট্রে আপনি যৌন নিপীড়নকারী কিন্তু অন্যটিতে নয়। কে সিদ্ধান্ত দেবে ? মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলয়হি ওয়া সাল্লাম ১৪০০ বছর আগের একটি সমাজ ও সংস্কৃতিতে বসবাস করতেন। তাই আমাদের মান ও স্তরের উপর ভিত্তি করে তাঁর বিচার করা আমাদের জন্য বাঞ্ছনীয় নয়। এরকম করাটা ভুল ও নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক।

 

এক দৃঢ় নৈতিক নিয়ম থাকা প্রয়োজন।যদি বিবাহে ও ঘনিষ্ট সম্পর্কে কোনো অনিষ্ট হয় তাহলে ঘনিষ্ট সম্পর্কে রাখা কারো জন্য উচিত নয়। যদি কোনো অনিষ্ট না হয় তাহলে এমন একজন তরুণ প্রাপ্তবয়স্কের জন্য নিজস্ব পছন্দে বিবাহ করা পুরোপুরি সমীচীন।

 

যদি আপনি প্রশ্ন করেন যে, একজন মানুষ কীভাবে তা নিরুপণ করতে পারে তাহলে শুনুন,এটা তাদের দৈহিক বৃদ্ধির লক্ষণ দেখে স্পষ্টহয়ে যায়, অনুরূপ এই তরুণ প্রাপ্তবয়স্ক মন-মানসিকতার দিক থেকে কেমন তা দেখেও স্পষ্ট হয়ে যায়। যদি তারা এর উপযুক্ত হয় তাহলে বৈবাহিক সম্পর্কের সাথে অগ্রসর হওয়া তাদের অধিকার। 

 

নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম ছিলেন সমগ্র মানবতা এবং বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের (আধুনিক ইউরোপীয়দের থেকে শুরু করে আস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী পর্যন্ত) জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ দৃষ্টান্ত। তিনি আল্লাহ্‌র রসূল ছিলেন। তিনি শুধু আল্লাহ্‌র নবি ও রসূলই ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন একজন কূটনীতিজ্ঞ, শাসক, সামরিক নেতা, প্রতিবেশি ও বন্ধু প্রভৃতি। পারিবারিক জীবন একটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় যেখানে তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠ দৃষ্টান্ত, কারণ তিনি ছিলেন একজন স্বামী এবং একজন পিতা। বিশ্বের, বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলির অনেক পারিবারিক সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের জীবনচরিতের আনুগত্য ও অনুসরণের মাধ্যমে।

 

যখন সত্য আসে তখন মিথ্যা বিলুপ্ত হয়ে যায়। আল্লাহ্‌ তাআলা বলছেন : “বলো, সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে, আর মিথ্যা তো হয়েই থাকে”। [সূরা ইসরা ১৭:৮১]

 

তথ্যসূত্র

1. http://www.answering-christianity.com/aisha.htm

2. http://www.answering christianity.com/sami_zaatri/aisha_and_prophet_Muhammad .htm

3. http://www.answering-christianity.com/childbrides_rebuttal.htm

4. http://muslim-responses.com/Marriage_with_Aisha/Marriage_with_Aisha_

5. http://www.islamic-awareness.org/Polemics/aishah.html

6. http://www.iol.ie/~afifi/BICNews/Sabeel/sabeel6.htm

7. http://www.call-to-monotheism.com/why_did_prophet_muhammed_marry_aisha_at_a_young_age__is_that_morally_right__what_about_paedophilia___by_dan_1988

8. http://forums.almaghrib.org/showthread.php?t=64727

9. http://www.letmeturnthetables.com/2008/07/why-prophet-muhammad-married-aisha-when.html

10. http://www.ummaland.com/blog/927/defending-the-marriage-of-our-beloved-prophet-muhammad-s-a-w-s-with-our-bel/

11. http://www.ebnmaryam.com/vb/t196253-3.html

7094 Views
Correct us or Correct yourself
.
Comments
Top of page